আসসালামু আলাইকুম। আশা করি ভাল আছেন। আমি আজকে নদ নদী নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমেই বলে নেই আজকের নদনদী টি একটা অন্যরকম হবে। আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মোঃ আক্তার স্যার। তাকে অনুসরণ করে আমার এই পোস্ট।
Bcs preliminary preparation
বাংলাদেশে ছোট-বড় প্রায় ৭০০ নদী রয়েছে। তারমধ্যে ৫৭ টি আন্তর্জাতিক নদী ।৩টি মায়ানমার থেকে এসেছে। ভারত থেকে এসেছে ৫৪ টি ।( মাধ্যমিক ভূগোল:সূত্র)
নদ ও নদীর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই। ব্যাকরণগত পার্থক্য ছাড়া।

বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী ও বৃহত্তম নদী মেঘনা। বাংলাদেশের চরবহুল নদী যমুনা। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী। পৃথিবীর বৃহত্তম নদী আমাজন। পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। ব দ্বীপের আয়তন প্রায় ৩২শতাংশ ।
মহানন্দাঃ হিমালয় এর মহালড্রিম পর্বত থেকে বাংলাদেশ পঞ্চগড় জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। মহানন্দ নদী টি ভারত হয়ে বাংলাদেশ আবার বাংলাদেশের ভারতে গিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে। মহানন্দা নদীতে পতিত হয়েছে পদ্মায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোদাগাড়ী নামক স্থানে। মহানন্দ প্রধানত চারটি শাখা নদী রয়েছে। পূর্নভবা, নাগর,টাংগন, কুলিখ।
তিস্তাঃ ভারতের সিকিম চিতামু হ্রদ থেকে এর উৎপত্তি। বাংলাদেশর নীলফামারী জেলার ভিতর দিয়ে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের পাঁচটি জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদী। তিস্তা নদীকে উত্তরাঞ্চলে লাইফ লাইন বলা হয়।
নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । তিস্তা নদী পতন হয়েছে কুড়িগ্রামের চিলমারী নামক স্থানে। তিস্তার মোট দৈর্ঘ্য ৩১৫ কিলোমিটার । বাংলাদেশ মাত্র ১১৫ কিলোমিটার। বাকি ২০০ কিলোমিটার ভারতে । তিস্তা নদীর শাখা নদী ৩ টি । পূর্নভবা ,আত্রাই ,করতোয়া।তিস্তা শব্দটি এসেছে ৩ প্রবাহ থেকে।
ব্রহ্মপুত্রঃ প্রাচীন নাম লোহিত্য ।ব্রহ্মপুত্র নদ ।ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎপত্তি হয়েছে ভারতের তিব্বতের কৈলাস শৃঙ্গ মান সরোবর হৃদ থেকে। ১৭৮৭ সালে ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। চিলমারী কুড়িগ্রাম এ এসে তিস্তার সাথে মিলিত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে দেওয়ানগঞ্জ জামালপুর প্রবেশ করেছে। ব্রহ্মপুত্র নদটি ভৈরব বাজার কিশোরগঞ্জ গিয়ে মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। আর এর অন্য একটি শাখা যমুনাতে পতিত হয়েছে। যমুনা নদীর অপর নাম জোনাই বা পূর্ব নাম জোনাই। যমুনা নদী ভূমিকম্পের ফলে এরপর প্রশস্ততা বৃদ্ধি পেয়ে যায় । যমুনা নদী পদ্মার সাথে মিলিত হয়। যমুনা নদীটি গোয়ালন্দ রাজবাড়ী নামক স্থানে গিয়ে যমুনা নাম এবং নতুন নাম ধারণ করে পদ্মা নামে। বাঙ্গালী নদী যমুনা নদী শাখা নদী। শীলাদেবীর ঘাট বগুড়া তে অবস্থিত। বগুড়া তে অবস্থিত মহাস্থানগড়। বগুড়া রয়েছে জিয়ন্ত কূপ ।
হযরত শাহ সুলতান বলখীর মাজার বগুড়াতে। ব তে বাঙালি , গ তে গঙ্গা। সর্বপ্রথম বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকেন জেমস রেনেল। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শেরপুর জেলা ও জামালপুর জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
মেঘনাঃ আসামের বরাক নামক স্থান হতে এর উৎপত্তি। সিলেট জেলার জকিগঞ্জ এর ভিতরে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের প্রবেশ করার পর বরাকের দুটি শাখা নদী হয়েছে। সুরমাও কুশিয়ারা । সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুটি আজমিরীগঞ্জ হবিগঞ্জে মিলিত হয়েছে। সিলেট জেলায় অবস্থিত বিরানি বাজার। বিবিয়ানা বাজার মৌলভীবাজারে অবস্থিত। আজমিরিগঞ্জ এরপর কালনী নাম ধারণ করে ভৈরব বাজার কিশোরগঞ্জ এসে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও কালনীর মিলিত স্থান ভৈরব বাজার কিশোরগঞ্জ। এ পর নদীটি মেঘনা নাম নিয়ে চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদরে পতিত হয়েছে। তারপর পদ্মা ও মেঘনা হয়েছে চাঁদপুরে ।চাঁদপুরে বিখ্যাত একটি স্থান রয়েছে সেটা হচ্ছে রক্ত সোপান। যা মুক্তিযুদ্ধাদের স্মৃতি বহন করে। রক্ত সোপান বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী ডক্টর দীপু মনি উদ্ভাবন করেছিলেন। মেঘনা নদী টি প্রশস্ততম এবং দীর্ঘতম নদী। বৃহত্তম নদী ও বটে। মেঘনার শাখা নদী মনু, বাউলাই, তিতাস এবং গোমতী।
পদ্মাঃ পদ্মা নদীর ভারতীয় নাম গঙ্গা। গঙ্গার অপর নাম নলিনী। গঙ্গার উৎপত্তি স্থান ভারতের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে। পদ্মা বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রবেশ করেছে। পদ্মার বাংলাদেশের অপর নাম কীর্তিনাশা। পদ্মার উপনদী মহানন্দা। মহানন্দা নদী গোদাগাড়ী রাজশাহীতে এসে মিশেছে। যমুনা মিলিত হয়েছে গোয়ালন্দ রাজবাড়ী । তারপর পদ্মা নাম নিয়ে মেঘনার সাথে মিলিত হয়ে চাঁদপুর জেলায় মেঘনা নাম নিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। পদ্মার শাখা নদী ৮টি। ১১ কিলোমিটার প্রসস্থতা । পদ্মার শাখানদী সমূহঃ মহানন্দা, কুমার, গড়াই, ভৈরব, আড়িয়াল খাঁ, মাথাভাঙ্গা, মধুমতি, পূর্নভবা।
কর্ণফুলীঃ ১৯৬২ সালে বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করা হয় কর্ণফুলী নদীর তীরে। বাংলাদেশের একমাত্র খরস্রোতা নদী কর্ণফুলী। কর্ণফুলী বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। ভারতের মিজোরাম রাজ্য লুসাই পাহাড় দিয়ে রাঙ্গামাটি ভিতর দিয়ে কালুরঘাট নামক স্থান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কর্ণফুলী নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। কর্ণফুলীর প্রধান শাখা নদীঃ হালদা, বোয়ালখালী, কাসালং, এবং মাইনি।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের নাম ছেড়া দ্বীপ।
হালদাঃ উৎপত্তিঃ খাগড়াছড়ির বদনাতলী। এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র। হালদা পতিত হয়েছে কর্ণফুলী নদীতে। হালদা নদী বাংলাদেশ উৎপত্তি এবং বাংলাদেশ সমাপ্তি। চট্টগ্রামের কালুরঘাট নামক স্থানে গিয়ে হাওড়া কর্ণফুলীতে পতিত হয় ।
গোমতীঃ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা জেলার একটি নদী। গোমতীকে কুমিল্লার দুঃখ বলা হয়।
নাফঃ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য ও বাংলাদেশের কক্সবাজার কে পৃথক করেছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ উপজেলা টেকনাফ এবং মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর নাফ নদীর তীরে অবস্থিত। আরাকান পর্বত থেকে উৎপত্তি। বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মাইভার পর্বত থেকে মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তিন।বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।